প্রিমিয়ার লিগ ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর। দেশসেরা লিগে খেলা যেকোনো নবাগত ক্লাবের জন্যই রোমাঞ্চকর ব্যাপার। এবার চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে প্রিমিয়ারে উন্নীত ফর্টিস ফুটবল ক্লাবের রোমাঞ্চের আরো বড় কারণ আছে— স্বীকৃত তারকাদের নিয়ে বড় দল নয়, বাজেটের বেশির ভাগ তারা ব্যয় করবে ফুটবলার তৈরিতে। তেমনটিই জানিয়েছেন ক্লাবটির পৃষ্ঠপোষক ফর্টিস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহদাত হোসেন।
প্রিমিয়ার লিগে ওঠার উদযাপনটা ফর্টিস ফুটবল ক্লাব করতে চায় অন্যভাবে। ‘আপাতত আমাদের শিরোপার চিন্তা নেই, মাঝারি মানের দল হয়ে থাকতে চায় ফর্টিস ফুটবল ক্লাব। মূল লক্ষ্য হবে আমাদের খেলোয়াড় তৈরি করা। একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবলার তৈরি করে মূল স্রোতে জোগান দেওয়া। এভাবে করতে পারলে আমার ক্লাবটি একসময় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে’, জানিয়েছেন শাহদাত হোসেন। এই লক্ষ্য পূরণে ঢাকার বাইরে ৯টি ট্রেনিং সেন্টার তৈরির ভাবনা রয়েছে ফর্টিস গ্রুপের।
প্রিমিয়ারে নবাগত ক্লাবের সামনে রোল মডেলও রয়েছে। ইউরোপের ক্লাবগুলোরই যেমন এমন সেন্টার রয়েছে। সেসব সেন্টার থেকে নিজেদের তাঁবু তো বটেই, অন্য ক্লাবের কাছে খেলোয়াড় বিক্রি করে উপার্জনও করে। ফর্টিস গ্রুপের কর্ণধারের লক্ষ্য সেটাই, ‘গাঁটের পয়সা দিয়ে ফুটবল ক্লাব চালালে একসময় অনীহা তৈরি হবেই। তাই আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল ব্যবস্থাপনাকে অনুসরণ করতে চাই। একটা সময় গিয়ে যেন খেলোয়াড় কেনাবেচা করে এবং অন্যান্য উৎসর আয় দিয়ে ক্লাব চলতে পারে। তাই একটা ফিন্যানশিয়াল মডেল তৈরি করেছি এবং এ বছরেই ৯ জেলায় ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করতে চাই। ওখানকার প্রশাসনের সঙ্গেও আমাদের আলাপ হয়ে গেছে। ’
নবাগত ক্লাবটির এই পরিকল্পনার অনেকটা জুড়ে পার্বত্য অঞ্চলের শহরগুলো, যেখান থেকে একসময় অনেক ফুটবলার খেলতেন জাতীয় দলে। সেসব শহর থেকে তুলে আনা প্রতিভা ঘষামাজার কাজটি হবে বিদেশি কোচের অধীনে। ঢাকার বেরাইদে ৪০ বিঘা জমির ওপর ফুটবলারদের জন্য আবাসন ও খেলার মাঠ তৈরি আছে ফর্টিসের।
প্রাথমিকভাবে ৯ জেলা থেকে প্রতিভা অন্বেষণ করলেও পরে সেখানেও আবাসন ব্যবস্থাসহ ফুটবল প্রশিক্ষণের সব সুযোগ-সুবিধা রাখার পরিকল্পনা ফর্টিসের। ‘ছয় বছর বয়সীদের নিয়ে শুরু করার ব্যাপারটা অনেকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য না-ও হতে পারে। তবে ঢাকায় আমাদের ফুটবল একাডেমিতে এ রকম অনেক বাচ্চা আছে। মিনি মেসি খ্যাত আবদুল্লাহ রায়হানকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে যে মাতামাতি হচ্ছে, সে আমাদের একাডেমিরই ফুটবলার। ওর মতো আরো এক প্রতিভা আছে একাডেমিতে। আমাদের ফুটবলকে বদলাতে হলে ছোট বাচ্চাদের দিয়েই শুরু করতে হবে’, এমনটাই বিশ্বাস করেন শাহদাত হোসেন।